![]() |
| যৌথ মূলধনী ব্যবসা কি ও কাকে বলে |
যৌথ মূলধনী ব্যবসা
মুনাফা আয়ের জন্য কতগুলো ব্যক্তি স্বেচ্ছায় একসঙ্গে হয়ে যৌথভাবে পুঁজি যোগাড় করে এবং এর সাথে দেশের পর্যন্ত আইন মেনে যে ব্যবসা শুরু করে তাকে যৌথ মূলধনী ব্যবসা বলে। এই যৌথ মূলধনী কোম্পানি সর্বপ্রথম ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ কম্পানি শুরুর পিছনে শিল্প বিপ্লবের পর যে শিল্প বাণিজ্যের একচেটিয়া প্রসার হয় হয়েছিল ,এই শিল্প বিপ্লবের বিস্তর প্রসার যৌথ মূলধন ব্যবসার সৃষ্টির পিছনে আশীর্বাদস্বরূপ কাজ করেছে।
এই ব্যবস্থা নিজস্ব নাম ও নিজস্ব সীলমোহর দ্বারা প্রচলিত হয় এবং বিভিন্ন অস্তিত্বের অধিকারী হয় এই কোম্পানির মূলধন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্রান্তে বিভক্ত থাকে এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশকে ব্যবসার শেয়ার নামে অভিহিত করা হয়। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে মুনাফা অর্জন করার উদ্দেশ্যে কিছু ব্যক্তি নিজের ইচ্ছায় একত্রিতভাবে মূলধন সরবরাহ করে যে ব্যবসা শুরু করে।
নিচে যৌথ মূলধনী ব্যবসার কিছু সংজ্ঞা উল্লেখ করা হলো
যৌথ মূলধনী কোম্পানির বৈশিষ্ট্য
বর্তমানে এই বড় বড় ব্যবসার জগতে যৌথ মূলধনী ব্যবসা একটি জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন ।একটি চিরন্তন অস্তিত্বের অধিকারী কৃত্রিম ব্যক্তির সত্তা দক্ষ পরিচালক একে দিয়েছে এক আলাদা স্বকীয়তা নিচে এর কিছু বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো।
যৌথ মূলধনী ব্যবসার বৈশিষ্ট্যকে সাধারণভাবে দুইটি ভাগে ভাগ করা যায় একটা হচ্ছে আইনগত বৈশিষ্ট অপরটি হচ্ছে সাধারণ বৈশিষ্ট্য ।
আইনগত বৈশিষ্ট্য
যৌথ মূলধনী ব্যবসার যে সকল বৈশিষ্ট্য আইনের মাধ্যমে তৈরি তাকে আইনগত বা আইনের মাধ্যমে তৈরি বৈশিষ্ট্য বলে নিচে সকল বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো
আইন সৃষ্টি প্রতিষ্ঠা: যৌথ মূল ব্যবসা আইন ১৯১৩ সালের ২ ক ঘর ধারায় বলা হয়েছে,যৌথ মূলধনী ব্যবসা বলতে এ আইনের অধীনে গঠিত এবং নিবন্ধনকৃত কোন কোম্পানি বা কোন বিদ্যমান কোম্পানিকে।
কৃত্রিম সত্তা বা অস্তিত্ব: যৌথ মূলধনী ব্যবসার নিজস্ব ও কৃত্রিম ব্যক্তির সত্তার অস্তিত্বের অধিকারী হয়। যে কোন বিষয় নিয়ে যৌথ মূলধন ব্যবসা নিজ নামে যেকোনো বিষয়ে লেনদেন চুক্তি স্বাক্ষর ও যেকোনো বিষয় নিয়ে মামলা করতে পারে। আবার কোন ব্যক্তির সাথে হরণ হলেও সে ব্যক্তি চাইলে এই যৌথ মূলধনী ব্যবসার নামেও মামলা করতে পারে এজন্য এটি একটি কৃত্রিম সত্যের অধিকারী।
চিরন্তন অস্তিত্ব: যৌথ মূলধনী ব্যবসা। নিজস্ব কৃত্রিম ব্যক্তি সত্তার পাশাপাশি অধিকারী হয়ে থাকে। মালিক শ্রেণি মৃত্যু দেউলিয়া শেয়ার হস্তান্তর ইত্যাদি ও প্রত্যাশিত ঘটনায় যৌথ মূলধনী ব্যবসায়ের অস্তিত্ব সহজেই বিলীন হয়ে যায় না।
নিবন্ধন:ওপরের আইন অনুযায়ী যৌথ মূলধনী ব্যবসা অবশ্যই নিবন্ধিত হতে হবে। এবং এই নিবন্ধন এই যৌথ মূলধনী ব্যবসার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক।
সীমাবদ্ধতায় দায় :শেয়ারহোল্ডার যৌথ মূলধনী ব্যবসায়ীদের নিকট হতে যে পরিমাণ শেয়ার কিনে এই শেয়ারের দায় সাধারণত ওই ব্যক্তির থাকে এখানে কোম্পানি কোন দায় থাকে না।
সাধারণ সিলমোহর :কৃত্রিম ও আইনগত সত্যের অধিকারী হবার কারণে যৌথ মূলধন ব্যবসার একটি নিজস্ব সাধারণশীল মোড় থাকে। আরে যৌথ মুলতানি ব্যবসা তার নিজস্ব বৈধতার জন্য সাধারণ সিলমন ব্যবহার করে থাকে। আর ব্যবসার যেকোনো কাজে এই ছিল ব্যবহার করা হয়।
শেয়ার মূলধন:যৌথ মূলধনী ব্যবসায়ের সামগ্রিক মূলধনের ছোট ছোট অংশ হলো। আর ব্যবসায়ের লোকজনেরা চাইলে এই শেয়ারের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ বিক্রয় করে মূলধনু পুঁজি গঠন করতে পারে।
সদস্য সংখ্যা: যৌথ মূলধনী ব্যবসায়ের আইন অনুযায়ী প্রাইভেট কোম্পানিতে সর্বনিম্ন ২ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ জন এবং পাবলিক কোম্পানিকে তো সর্বনিম্ন ৭ জন শেয়ার হোল্ডার থাকে।
শেয়ার হস্তান্তর: যেকোনো পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি শেয়ার অবাক ভাবে স্বতন্ত্র করতে পারে এই শেয়ার হস্তান্তর আইন বলে। অবশ্যই ওই পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে বৈধ নিবন্ধিত করতে হবে।
সাধারণ বৈশিষ্ট্যসমূহ
যৌথ মূলধনী ব্যবসায় সাধারণ বৈশিষ্ট্যের নিচে উল্লেখ করা হলো
স্বেচ্ছামূলক সংস্থা: কতিপয় ব্যক্তিএকসাথে হয়ে ও নিজের ইচ্ছায় এ যৌথ মূলধন ব্যবসা গঠন করে।তবে চাইলেই অন্য যেকোনো ব্যক্তি ওই যৌথ মূলধনী ব্যবসায়ের শেয়ার করার মাধ্যমে তাদের সাথে অংশগ্রহণ করতে পারে।
অধিক মূলধন:এই যৌথ মূলধনী ব্যবসায় অধিক মূলধন গঠনের সুযোগ রয়েছে। সদস্যরা মালিকের সংখ্যা বিশ্বে এই মূলধনের বেশি হয়ে থাকে।
জটিল প্রণালী: এই যৌথ মূলধনী ব্যবসায় গঠন বলতে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। কারণ এই যৌথ মূলধনী ব্যবসা গঠনের ক্ষেত্রে অনেক আনুষ্ঠু আনুষ্ঠানিকতা দরকার ।আবার অন্যান্য ব্যবসায়ের ন্যায় এই যৌথ মূলধনী ব্যবসার কোনো সহজ জটিল প্রণালী নেই।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা:যৌথ মূলধনী ব্যবসা সান্তনুর ব্যবস্থার মাধ্যমে হয়ে থাকে। কেননা কোম্পানির যে কোন সিদ্ধান্ত সদস্যের সমাগরিষ্ঠের উপর ভিত্তি করে গ্রহণ করা হয়।
কর প্রদান:যৌথ মূলধনী ব্যবসা আইকৃত মুনাফার উপর ভিত্তি করে কল প্রদান করতে হয়। কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার গনপ্রাপ্ত লাভের উপর নির্দিষ্ট সীমার ওপর কর দিয়ে থাকে।
মুনাফা বন্টন:ব্যবসায় আইকৃত মুনাফা ব্যবসার নির্দিষ্ট আইন অনুযায়ী ও মূলধনের আনুপাতিক হারে ভাগ করা হয়। পরিচালনা মন্ডলীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আয়কৃত মূলধনের ওপর শতকরা হারে লভ্যাংশ ঘোষণা ও বন্টন করা হয়।
দক্ষ ব্যবস্থাপনা: ভিন্ন ভিন্ন ব্যবস্থাপনার কারণে যৌথ মূলধন ব্যবসায়ের দক্ষ্যাবস্থাপনার অধিকারী হয়ে থাকে।
বৃহ আয়তনের সংগঠন: যৌথ মূলধনী ব্যবসায়ের সদস্য সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ার জন্য এর আয়তন অনেক বড় হয়।
উদ্দেশ্য: এই যৌথ মূলধনী কোম্পানি কি উদ্দেশ্যে তৈরি হলো তার একটা নিজস্ব স্মারকলিপি থাকে। এবং এ স্মারকলিপি লিখিত নিয়ম কানুন এই ব্যবসায়ের সবারই বাধ্যতামূলকভাবে মানতে হয়।
যৌথ মূলধন ব্যবসায়ের অপরিহার্য উপাদান সমূহ
যেই যেই বিষয়গুলো এই যৌথ মূলধনী ব্যবসায়ের গঠনের জন্য মেন্টেন করা খুবই দরকার সেগুলো নিতে আলোচনা করা হলো।
আইন সৃষ্টি প্রতিষ্ঠান:যৌথ মূলধনী ব্যবসা একটি সৃষ্ট প্রতিষ্টান। এই আইনটা ১৯৯৪ সালে তৈরি করা হয়।
স্বতন্ত্র নাম: যৌথ মূলধনী ব্যবসার আলাদা অস্তিত্বের স্বার্থে অবশ্য একটা স্বতন্ত্র নাম এবং স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বৈশিষ্ট্য থাকে।
সীমাবদ্ধ দায়: এই কোম্পানির দায় পদার্থ সাধারণত সীমাবদ্ধ।কেননা যারা মালিক সমিতি রয়েছে তাদের দায় থাকে শুধু শেয়ার মূল্য পর্যন্ত।
স্বেচ্ছামূলক সংগঠন:যৌথ মূলধনী ব্যবসার সদস্যগণ স্বেচ্ছায় একত্রিত হয়ে নিজেদের মূলধন বিনিয়োগ করে এই ব্যবসা শুরু কর। তাছাড়া যেকোনো ব্যক্তি এই এই ব্যবসায় শামিল হতে পারে শুধু শেয়ার করার মাধ্যমে।
চিরন্তন অস্তিত্ব; যৌথ মূলধনী ব্যবসা কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তার পাশাপাশি চিরন্তন অস্তিত্বের অধিকারী হয়ে থাকে। কেননা এই ব্যবসার কোন মালিকের মৃত্যু শেয়ার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় হস্তান্তর এসব অপ্রত্যাশিত ঘটনা সহজেই এই ব্যবসার অস্তিত্বকে বিলীন হতে দেয় না।
কৃত্রিম ব্যক্তির সত্ত: যৌথ মূলধনী কোম্পানী পৃথক ও কৃতির ব্যক্তির সাথে অধিকারী হয়ে থাকে। কেননা এ কোম্পানির নিজ নামে লেনদেন চুক্তি ও মামলা করতে পারে। এরির সাথে অন্য কোন ব্যক্তির স্বার্থ যদি কোম্পানি হরণ করে তাহলে সে ব্যক্তি কোম্পানির মামলা করতে পারে।
মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক থাকে: যৌথ মূলধন কোম্পানির মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার সম্পূর্ণ পৃথক থাকে। শেয়ারে মালিকগণ সরাসরি ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে না। এই যৌথ মূলধনী ব্যবসা ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য মানিকগঞ্জের ভেতর থেকে একজন নির্বাচনে নির্বাচন প্রার্থী হতে হয়।
নিজস্ব সিলমোহর:যৌথ মূলধনী ব্যবসার অবশ্যই একটি নিজস্ব সিলমর থাকবে। ব্যবসার যেকোনো কার্যক্রমে সিলমোর ব্যবহার করতে হবে।
মূলধন নির্দিষ্ট মূল্যের শেয়ার বিভক্ত: যৌথ মূলধনী কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন কে কতগুলো ক্ষুদ্র অংশ বিভক্ত করা যায়। এই ক্ষুদ্র অংশের মধ্যে আংশিক মুল্যকে শেয়ার বোঝায়। যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একাধিক শেয়ার করা করে নির্দিষ্ট অংশের মালিকানা লাভ করতে পারে।
শেয়ার হস্তান্তর যোগ্যতা: পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য হয়।
যৌথ মূলধনী কোম্পানির সুবিধা
চিরন্তন অস্তিত্ব: যৌথ মূলধনী কোম্পানি আইন সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানে বলে চিরন্তন অস্তিত্ব ধারণ করে। এবং ওই ব্যবসায়ের কোন সদস্যের অপ্রত্যাশিত ক্ষতি ব্যবসা অস্তিত্বের উপর কোন প্রভাব বিস্তার করতে পারে না।
সীমিত দায়বদ্ধতা: যৌথ মূলধন ব্যবসায়ের শেয়ার হোল্ডার গান এর দায়বদ্ধতা সীমাবদ্ধ হয়ে থাকে। যার ফলে কম যুক্তিতে অধিক বিনিয়োগ করতে পারে। এবং এশিয়ারের কোন ক্ষতি হলে কোম্পানি শেয়ার হোল্ডারদের ব্যক্তিগত সম্পদের কোন দায়বদ্ধতা থাকে না।
অধিক মূলধন:শেয়ার হোল্ডারদের সংখ্যা অনেক বেশি হয় যৌথ মূলধনী ব্যবসা অধিক মূলধন গঠন সহজ হয়।
আইনগত সত্তা: যৌথ মূলধন কোম্পানি আইন। এই আইন সাধারণত মূলধনী ব্যবসায়ের কোম্পানির উন্নতির সহায়ক হয়।
গণতন্ত্র চর্চা: যৌথ মূলধনে ব্যবসা কোন ব্যক্তি একক মতামত সৃষ্টি করতে পারে না এককভাবে চালাতেও পারে না।এটা চালানোর জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধি মাদ্রাসার সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে হয়।
শেয়ার হস্তান্তর: যৌথ মূলধনী ব্যবসায়ের শেয়ার অবাধতে হস্তান্তর যোগ্য শেয়ারহোল্ডার গ্রন্থ তাদের শেয়ার হস্তান্তর করতে পারে।
ঋণের সুযোগ: যৌথ মূলধনী ব্যবসা চিরন্তন অস্তিত্ব ও স্বাধীনতার অধিকারী হয় জনগণ ঋণ প্রদানে আগ্রহী হয়। যার ফলে ঋণ কৃত অর্থ তথ্য ব্যবসা বিস্তার প্রসার ব্যবহার করা যায়।
কর্মসংস্থানের সুযোগ: যৌথ মূলধনী ব্যবসার পরিধি অধিক হওয়ায়। এই ব্যবসায় অনেক শূন্য পদ থাকে। যেটা অন্যদেরকে কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করে।
ঝুঁকি বন্টন: এই ব্যবসায়ের সদস্য সংখ্যা অধিক হয় যে কোন ঝুঁকি তার নিজেদের মধ্যে বন্টন করে নিতে পারে। এবং যেটা একক ব্যক্তিত্বের ওপর ঝুকিমুক্ত রাখে।
সম্প্রসারের সুযোগ: যৌথ ব্যবসায় মূলধন বেশি খুব বেশি জনবল থাকার কারণে এই ব্যবসার সম্প্রসারণ অধিকারে হয়।
বড় আয়তনের ব্যবসার সুযোগ:যৌথ মূলধনী ব্যবসা অধিক মূলধন ব্যবসার আয়তন বড় হয় এর মাধ্যমে যে কোন ব্যবসা অনেক বড় করে করার সুযোগ থাকে।
দক্ষতা ও পুজিস সমন্বয় :যৌথ মূলধনী ব্যবসা একটি বিরোধায়তন প্রতিষ্ঠান বিধায় অধিক পুলিশ সমন্বয় ঘটে ফলে অধিক দক্ষতার সাথে কার্য সম্পাদন করতে পারে।
উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার: বিনিয়োগের পরিমাণ বেশি বলে কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন কর্মী বিনিয়োগ করা যায় এবং সুষ্ঠু গবেষণা কার্য পরিচালনা করা যায়।
বিজ্ঞাপন ও প্রচার : কোম্পানির সদস্যগণ নিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকে বনে কোম্পানির পণ্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচার ঘটে। যা কোম্পানির বিক্রয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। ১৮। বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ (Attraction of foreign investment)। আইন সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাষ্ট্রের স্বপক্ষে বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ কেবল কোম্পানিতেই খুঁজি বিনিয়োগে অমাহী হয়।
মুনাফা খান: কোম্পানির অর্জিত মুনাফা শেয়ার মালিকদের মধ্যে বষ্টিত হয়। পরিচালক পর্ষদ অনুযায়ী আদায়কৃত রাগগনের উপর শতকরা হারে মুনাফা বণ্টন করা হয়।
জনসাধারণের আস্থ্য:আইনের মাধ্যমে যৌগমূলধনী কোম্পানি গাইত, পরিচালিও ও নিবন্ধিত হয় বলে এ কোম্পানির উপর অনগণের আস্থা বেশি। ফলে বিনিয়োগকারীরা অধিক বিনিয়োগ করতে উৎসাহী হয়।
যৌথ মূলধনী কোম্পানির অসুবিধাসমূহ
যৌথ মূলধনী কোম্পানির সুবিধার পাশাপানি বেশকিছু অসুবিধা রয়েছে। বিশেষত যৌথ মূলধনী কোম্পানির গঠন ও নিয়ন্ত্রণ আনুষ্ঠানিকতার ব্যাপার। নিজে যৌথ মূলধনী কোম্পানির অসুবিধাসমূহ উল্লেখ করা হলো।
জটিল গঠনপ্রণালী : ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন দ্বারা যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠিত ও পরিচালিত হয়। ফলে অধিক আনুষ্ঠানিকতা বিধায় এর গঠনপ্রণালী তুলনামূলকভাবে জটিল।
আমলাতান্ত্রিকতা : ও কোম্পানির সিদ্ধান্ত গ্রহণে অধিক আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন হয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণ, বর্তন, পরিবর্তন, পরিদর্থনে আনুষ্ঠানিক তার জন্য এর আমলাতান্ত্রিকতায় জটিলতা বেশি।
অদক্ষতা: কোম্পানির ব্যবস্থাপনার বেতনভোগী কর্মচারী নিয়োগ করা হয়। এ সকল বেতনভোগী কর্মচারী সরাসরি মুনাফায় আংগাহণ করে না বলে কাজে ততটা উৎসাহ পায় না। ফলে কাজে অনেক সময় অদক্ষতা দেখা দেয়।
ব্যর আধিক্য : কোম্পানির যে-কোন সিদ্ধান্তে অধিক আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয়।আনুষ্ঠানিকতা পালন, বলিল ও খাতা সংরক্ষণ, হিসাব-নিকাশ করার ফলে ব্যয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ফলে ব্যবসায়েত মুনাফার পরিমাণ হ্রাস পায়।
একচেটিয়া ব্যবসায় : বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠান তার উৎপাদিত পণ্য দিয়ে বিস্তৃত বাজার প্রতিষ্ঠা করে। এতে একচেটিয়া বাজার সৃষ্টি হয় এবং ভোজরা ঢুক্তভোগী হয়ে পড়ে।
আইনের কড়াকড়ি : যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠন ও নিয়ন্ত্রণ করতে অধিক আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয় বলে উদ্যোক্তাদেরকে নিরুৎসাহিত করে। ফলে ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা : আনুষ্ঠানিকতা পালন ও সভা অনুষ্ঠানের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া জটিল হয়। এতে সিন্ধান্ত গ্রহণ বিলম্বিত হয়ে পড়ে।
স্বজন প্রীতি : কোম্পানির শূন্য পদে লোক নিয়োগের দায়িত্ব পরিচালক পর্যদের। অনেক সময় লোক নিয়োগ, পদোন্নতি ইত্যাদির জন্য নিজেদের লোক নিয়োগ করে থাকে।
ক্ষেত্রের সীমাবদ্ধতা : একমালিকানা ও অংশীদারি ব্যবসায় যেখানে উপযুক্ত সেখানে কোম্পানি ব্যবসায় উপযুক্ত নয়। ফলে সকল ক্ষেত্রে কোম্পানি সংগঠন কার্যকর নয়। তাছাড়া সংঘবিধি অনুযায়ী এর কার্যক্ষেত্র সীমাবদ্ধ হয়ে থাকে।
সংখ্যালঘুর স্বার্থহানি : কোম্পানির সকল সিদ্ধান্তে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত গ্রহণ করা হয়। এতে সংখ্যালঘুদের স্বার্থহানি ঘটে। তাছাড়া মুনাফা বণ্টনেও সংখ্যাগরিষ্ঠরা লাভবান হয়।
শেয়ার মালিকের উপেক্ষা : শেয়ারহোল্ডারগণ কোম্পানির মালিক হওয়া সত্ত্বেও সিদ্ধান্ত গ্রহণে পরিচালক পর্ষদের মতামত গ্রহণ করা হয়। ফলে শেয়ারহোল্ডাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়।
করের আধিক্য যৌথ মূলধনী কোম্পানিতে আয়ের উপর পূর্ণ কর প্রদান করতে হয়। পাশাপাশি প্রাপ্ত লভ্যাংশের উপর শেয়ার মালিকদের পূর্ণ সুদ প্রদান করতে হয়।
পৃথক ব্যবস্থাপনা: শেয়ারহোল্ডারগণ কোম্পানির পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে না।ফলে তারা কোম্পনির বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে না।
ফটকা ব্যবসায় : অসাধু ও অসৎ পরিচালকমণ্ডলী ব্যক্তিগত লাভের জন্য অসাধু উপায়ে ব্যবসা পরিচালনা করে।
শিখিল সম্পর্ক : কোম্পানি সংগঠনে নানা রকম জটিলতার কারণে মালিক ও মজুরদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের সৃষ্টি হয়। ফলে তাদের সম্পর্কের শিথিলতা দেখা দেয়।
পরোক্ষ সম্পর্ক : যৌথমূলধনী কোম্পানিতে মালিক ও ক্রেতাসাধারণের মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক ঘটে উঠে না। ফলে শ্রমিকের স্বার্থে কথা মালিকের নিকট পৌছায় না।
ব্যক্তিগত উৎসাহের অভাব : কোম্পানি ব্যবস্থাপনা হতে মালিকানা পৃথক হওয়ায় ব্যক্তিগত 'ৎসাহ হ্রাস পায়। ফলে এর উন্নতি ব্যাহত হয়।
বিরোধ : মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে সম্পর্ক না থাকায় ঊর্ধ্বতন ও অধঃস্তন কর্মী-মালিকের মধ্যে সংঘাত ঘটে। এতে কারবারে বিরোধ দেখা দেয় ও উন্নতি ব্যাহত হয়।
গোপনীয়তা রক্ষার অসুবিধা : তৃতীয় পক্ষ দ্বারা ব্যবসায় পরিচালিত হয় বলে ব্যবসায়ের গোপনীয়তা রক্ষা হয় না।
অনমনীয়তা : যৌথ মূলধনী কোম্পানিতে নমনীয়তার অভাব দেখা দেয়। ব্যবসায়ের পরিবর্তন, পরিবর্ধন, স্মারকলিপির পরিবর্তন করতে অধিক আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয়।
