শেয়ার বাজার কি? শেয়ার বাজার কাকে বলে?


শেয়ার বাজার কি ও গুরুত্ব
শেয়ার বাজার কি ও গুরুত্ব 


শেয়ার বাজার কাকে বলে
What is Stock Exchange

সে বিশেষ স্থানে  রাষ্টীয় প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি,  আধাসরকারী প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, স্টক, ঋণপত্র, সিকিউরিটি ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয়ের  সম্পাদনা করা হয় যে বাজারে তাকে শেয়ার বাজার (Stock Exchange) বলা হয়। এক কথায় বলা যায় বিশেষ কোন  স্থানে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন প্রকারের সাধারণ, যৌথ মূলধনী কোম্পানির শেয়ার স্টক ও ডিবেঞ্চার এবং বিভিন্ন রাষ্টীয় ও বেসরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ঋণপত্র  বিক্রয়ের হিসাব-নিকাস করা  হয় তাকে শেয়ার বাজার বলা হয়।

১৯৫৬ সালের সিকিউরিটি কনট্রাক্ট আইনের ধারায় বলা হয়েছে যে, "শেয়ার বাজার হচ্ছে এমন একটি সমিতি, সংগঠন বা ব্যক্তিবর্গের সমষ্টি ও লগ্নিপত্র এনা, বিক্রয় বা অনুরূপ ব্যবসায়কে সাহায্য পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণ করে এবং এটি কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হতে পারে, নাও পারে। Dr. Harold -এর মতে, 'Stock Exchange is an organised financial market, where stock and debentures of the public companies are bought and sold." অর্থাৎ শেয়ার বাজার হলো একটি সংগঠিত আর্থিক বাজার, সেখানে পাবলিক কোম্পানিসমূহের শেয়ার ও ঋণপত্র কেনাবেচা হয়।

শেয়ার বাজার হচ্ছে শেয়ার, স্টক ও সিকিউরিটি লেনদেনের একটি মাধ্যমিক বাজার (Secondary Market)। এ বাজারে শুধুমাত্র নিবন্দনভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ও সিকিউরিটি হিসাব-নিকাশ করা হয়। শেয়ার বাজারের সদস্যগন বা তাদের মনোনীত প্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ ক্রয়-বিক্রয়ে অংশগ্রহণ করতে পারে না। সাধারণ জনগণ শেয়ার বাজারে লেনদেন  করতে ইচ্ছা প্রসন করলে সদস্যদের মাধ্যমে তা করতে পারে। সবশেষে আমরা এক কথায়  বলতে পারি যে, শেয়ার বাজার হলো এমন এক ধরনের  বাজার যেখানে পাবলিক লিঃ কোম্পানির বন্ড, সিকিউরিটি, শেয়ার স্টক, ডিবেঞ্চার, ইত্যাদি নির্ধারণ কৃত নিয়ম-কানুন অনুযায়ী বেচা -কেনা করা হয়। এককথায়, ঋণপত্র,বন্ড,স্টক, ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য এটি হলো একটি খোলা বাজার। 

শেয়ার বাজারের উদ্দেশ্য
Objectives of Stock Exchange

 একটি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচক হিসেবে শেয়ার বাজারকে গণ্য করা হয়। একটি দেশের শিল্প কারখানা ও ব্যবসা- বাণিজ্যের উন্নয়নের লক্ষ্যে মূলধন বা  পুঁজি বাজার সৃষ্টি  এবং পুঁজি চলমানে গতিশীলতা এনে দেয় সে দেশে  শেয়ার বাজার। শেয়ার বাজার তৈরি ও চালনার পেছনে যে উদ্দেশ্যসমূহ  নিহিত রয়েছে তা নিম্নরূপ দিয়ে হলো যথা:

 ১। শেয়ার বাজারে নিবন্ধন ভুক্ত শেয়ার,স্টক,বন্ড, ডিবেঞ্চার ও অন্যান্য ঋণপত্র লেনদেনের নিয়ম-নীতি শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে  মেনে চলাই এর উদ্দেশ্য।

২। শেয়ার বাজার ঋণপ্রদান ও ঋণ গ্রহণর  মধ্যে মিলবন্ধন  ঘটিয়ে থাকে:

৩। দেশের (বিভিন্ন গ্রুপে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি)মূলধন বা পুজির গুরুত্বপূর্ণ আধার  হিসেবে কাজ করা; 

৪। শেয়ার বাজারে শেয়ারের মূল্যসূচক হিসাবে  নিবন্ধন ভুক্ত কোম্পানিগুলো তথ্য সরবরাহ করা;

৫। দেশের মূলধন বা পুজি বাজারের উন্নতির ক্ষেত্রে ও বিস্তর প্রসারের ক্ষেত্রে  সরকারকে সুপারিশ প্রদান করা;

৬) দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন মূলধন সৃষ্টির বিস্তর প্রসারের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন গতিশীলতা বাড়ানো;

৭। শেয়ার,বন্ড,স্টক, ঋণপত্র বা সিকিউরিটি এর ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের সুযোগ -সুবিধার্থে  সময়নু্য়ীয়  নিয়মকানুন পরিচালনা করা;

৮। বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের নিরাপত্তা প্রদান করা;

৯। জনগণকে অধিক সঞ্চয়ে উৎসাহী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা;

১০। বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও সরকারি সংস্থার জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণসংগ্রহ করার কাজে সহায়তা করা।

শেয়ার বাজারের কার্যাবলি
Functions of Stock Exchange

শেয়ার বাজারকে একটি দেশের  অর্থনীতির দর্পণস্বরুপ  হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। যে কোনো দেশের সেটা হোক উন্নত অথবা  অনুন্নত সকল দেশের অর্থনীতি ক্ষেত্রে  শেয়ার বাজারে ভূমিকা অপরিসীম। শেয়ার বাজারে  অপরিসীম ভূমিকা পালনে শেয়ার বাজারকে কিছু গুরুপূর্ণ  কার্যাবলিসমূহ  সম্পাদন করতে হয়। নিচে  কার্যাবলিসমূহ আলোচনা করা হলো:

১ দীর্ঘমেয়াদি মূলধন বা পুঁজির যোগান (Supply of long term finance): শেয়ার বাজার একটি দেশের জনসাধারণের মূলধনের  একটি বিরাট অংশ সঠিকভাবে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করে। আর এ বিনিয়োগ বিভিন্ন শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদি পুঁজির যোগানে সহায়তা করে।

২। পুঁজির গতিশীলতা বৃদ্ধি (Increasing the flow of capital): পুঁজির গতিশীলতা বৃদ্ধি করা ক্ষেত্রে শেয়ার বাজারের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। শেয়ার বাজার না থাকলে মানুষ তাদের জামকৃত মূলধন লাভজনকভাবে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতো। পুঁজির যদি সঠিকভাবে প্রবাহমান  না থাকে তাহলে  অর্থনীতিতে ধ্বস নেয়ে আসে, ব্যবসায়-বাণিজ্যে মন্দাভাব বিরাজ করতে  দেখা দেয়।

৩। সঞ্চয়ে উৎসাহ প্রদান (Inspiration for savings): সঞ্চয়ে উৎসাহ প্রদান করাও শেয়ার বাজারের একটি কাজ। জনগণ যে কোনো মূহুের্ত শেয়ার কেনা  আবার প্রয়োজনে বেচে দিয়ে  অর্থসংস্থান করতে পারে। এতে করে একদিকে থেকে  তারা যেমন  মুনাফা আয় করে থাকে তেমনি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও  আগ্রহী  হয়ে ওঠে।

৪। অর্থনৈতিক অবস্থানের  তথ্য প্রকাশ (Bring out information of economic condition): তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক অবস্থা, শেয়ারমূল্য, ঋণপত্রের ক্রয় বিক্রয়ের হিসাব  ইত্যাদি তথ্যাবলি শেয়ার বাজার নিয়মিতভাবে  প্রকাশ করে থাকে। ফলে বিনিয়োগকারীগণ এসব চিন্তাভাবনা করে অর্থ - সম্পদ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে  সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। আর যদি শেয়ার বাজারে  বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়া তাহলে তার  অর্থই হলো সে দেশের ভালো অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো।

৫। দ্রুত শিল্পায়ন (Rapid industrialisation): শিল্প-প্রতিষ্ঠানের বিশেষ করে নতুন  প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের পুজি বা মূলধনের সমস্যা সমাধানে শেয়ার বাজারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শেয়ার বাজারের ফলে নতুন প্রতিষ্ঠিত কারখানার কর্ম বিস্তার ও সম্প্রসারিত হওয়ার সাথে সাথে দেশের শিল্পায়নের গতিও বৃদ্ধি হয়।

৬। সহজ ঋণ গ্রহণ(Easy collection of loan): শেয়ার বাজারে শেয়ার বিনিয়োগ  ও ঋণ যে কোনো সময় বিক্রি করে নগদ টাকায় রূপান্তিরিত করা যায়। এর ফলে সহজভাবেই  বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার,স্টক, ও ঋণপত্র বন্ধক রেখে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারে।

৭। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষা (Preserving interest of the investors): শেয়ার বাজারের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষা করা। যেমন- বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ, কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষা করা যায়। 

৮। বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণ (Attracting foreign investment):শেয়ার বাজার তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার,বন্ড, সুষ্ঠুভাবে বেচা কেনার জন্য  সুযোগ সৃষ্টি করে এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুন্দর পরিবেশ তৈরিতে  সাহায্য করে। এছাড়া  শেয়ার বাজার দেশের বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্র চিহ্নিত করে দেশি ও বিদেশি নতুন বিনিয়োগকারীদেরকে বিনিয়োগ বাড়ানো জন্য আগ্রহ সৃষ্টি করে থাকে।

৯। কর্মসংস্থানের সুযোগ (Scope of employment): শেয়ার বাজারে দেশের কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শেয়ার বাজারের প্রভাবের ফলে ব্যবসায় বাণিজ্যের পরিধি ও  বিস্তৃত হয় এবং জাতীয় অর্থনীতিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ-সুবিধা  তৈরি হয়।

১০। ব্যাংকের তারল্য (Liquidity of bank) শেয়ার বাজার ব্যাংকের তারল্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। কারণ ব্যাংকগুলো শেয়ার বাজারে নিয়োজিত অর্থ যে কোনো সময় ফেরত পেতে পারে। ফলে ব্যাংকের তারল্য বজায় থাকে। 

১১। কোম্পানির দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা (Help in increasing company efficiency): তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো সবসময় চেষ্টা থাকে যাতে  করে যেন তাদের শেয়ারের দাম কমে না যায়। এজন্য কোম্পানিগুলো দক্ষতার সাথে কার্যাবলি পরিচালনা করে মুনাফা বৃদ্ধির প্রয়াস চালায়। মুনাফা বৃদ্ধি পেলে শেয়ার মূল্যে তার প্রভাব পড়ে। এতে শেয়ারহোল্ডারগণ বেশি হারে লভ্যাংশ পায়। ফলে শেয়ারের মূল্য কমে না গিয়ে বরং বাড়তে থাকে। এভাবে শেয়ার বাজার কোম্পানিগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধিতে পরোক্ষভাবে সহায়তা করে।

১২। প্রধিকে একশে (sobnmission of report);প্রতিদিন শেয়ার বাজারের বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের প্রতিবেদন প্রকাশ করা শেয়ার বাজাতের একটি অন্যতম কাজ। পরিশোরের ভূমিকা দেখে মারি যে শেয়ার বাজার বর্ণিত কার্যাবলি সম্পাদনের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রশংসনীয় রেখে চলেছে।

শেয়ার বাজারের বৈশিষ্ট্যসমূহ
Characteristics of Stock Exchange

শেয়ার বাজার এক ধরনের সুসংগঠিত বাজার ব্যবস্থা। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে এটি নিবন্ধনপ্রাপ্ত এবং পৃথক অস্তিত্বসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান। শেয়ার বাজার কোম্পানি হিসেবে গড়ে উঠলেও নিজে কোনো ব্যবসায়ে অংশগ্রহণ করতে পারে না। তাই এ সংগঠনটি কতিপয় বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এ সকল বৈশিষ্ট্যের আলোচনা নিচে দেয়া হলো :

১।সংগঠিত বাজার :সংগঠিত  শেয়ার বাজার হলো একটি নিয়মনীতি দ্বরা সিদ্ধ বাজার ব্যবস্থা। নির্দিষ্ট একটি  ভবনে এর ব্যবসায় প্রক্রিয়া চলে। এ শেয়ার বাজারে যৌথ মূলধনী কোম্পানির শেয়ার, ঋণপাত্র বা বন্ড, সরকারি ও আধা-সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহের শেয়ার সিকিউরিটি প্রভৃতি ক্রয়-বিক্রয় হয়। শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার জন্য এবং শেয়ারের লেনদেনের জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন প্রণয়ন করা হয়। এ ছাড়া শেয়ার বাজাবের তালিকাভুক্ত কোম্পানিরগুলোর শেয়ার ও ঋণপত্রাদিই কেবল এ বাজারে বেচাকেনা হতে পারে।

২। সীমাবদ্ধ দায়: শেয়ার বাজারগুলো সীমাবদ্ধ দায়বিশিষ্ট পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে গঠিত ও নিবন্ধিত হয়। তবে এ বাজার কোম্পানি হলেও নিজে কোনো ব্যবসায়ে লিপ্ত হতে পারে না। এর সদস্যগণ ব্যক্তিগতভাবে ব্যবসায় করে। এ বাজার বাবস্থা একটি কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়।

৩। লেনদেনে সীমাবদ্ধতা: শেয়ার বাজারে যারা সদস্য কেবল তারাই শেয়ার বেচাকেনায় অংশ নিতে পারে।শেয়ার বাজারে সদস্য ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি শেয়ার,বন্ড,স্টকের লেনদেনে অংশগ্রহণ করতে পারে না।

৪। পৃথক সত্তার অভাবঃ পাবলিক লিমিটেড  কোম্পনিগুলি কোম্পনি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও শেয়ার বাজারে নিজস্ব নামে কোনো চুক্তি সম্পাদন করতে পারেনা। শেয়ার বাজারে সদস্যগণই তাদের নিজেদের নামে শেয়ার বেচাকেনা করতে পারে। সদস্যদের এ সকল লেনদেন শেয়ার বাজারের নির্ধারিত নিয়মকানুন অনুসারে সম্পাদিত হয়।

৫। সদস্যদের যোগ্যতাসমূহ: কেবল আর্থনৈতিকভাবে সচ্ছলতাপূর্ণ  ব্যক্তিরাই শেয়ার বাজারের সদস্য হতে পারে। তাছাড়াও শেয়ার বাজারের সদস্যপদ পেতে হলে বর্তমান সদস্যদের মনোনয়েন এর দরকার পরে ।

৬। পরিচালক পরিষদ: শেয়ার বাজার সঠিকভাবে  পরিচালনা করার জন্য একটি পরিচালক পরিষদ থাকে। এ পর্ষদ শেয়ার বাজার পরিচালনার জন্য যে  নিয়মনীতি থাকে সেগুলো  তৈরি করে এবং বিভিন্ন প্রকার উপযুক্ত  পরিকল্পনা গ্রহণ করে।

৭। সদস্যদের লাভ-ক্ষতিতে প্রভাব: শেয়ার বাজারের সদস্যগণ আলাদা আলাদা ভাবে শেয়ার ক্রয় বিক্রয়ে অংশগ্রহণ করে।শেয়ার বাজারের শেয়ার লেনদেনের লাভ-ক্ষতির  জন্য সাধারণত সদস্যগণই দায়ী থাকে। কোনো সদস্যের লাভ বা ক্ষতি হলে তা দ্বারা শেয়ার বাজার প্রভাবিত হবে না।

৮। সদস্যপদ প্রাপ্তি: কোনো ব্যক্তি শেয়ার বাজারের সদস্য হতে চাইলে তাকে প্রথমে শেয়ার বাজারের শেয়ার বন্ড,স্টক ক্রয় করতে হবে। এরপর নির্ধারণকৃত  ফি প্রদান করতে হবে। তাছাড়া তাকে শেয়ার বাজারের বিধিনিষেধ গুলো  মেনে চলার জন্য স্বীকৃতি দিয়ে একটি অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে হয়।

শেয়ার বাজারের গুরুত্ব
Importance of Stock Exchange

যে কোনো দেশের অর্থনৈতিভাবে  উন্নতি করতে সে দেশের শেয়ার বাজার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখাছে। যে সকল অর্থনৈতিক কার্যসম্পন্ন করার  মাধ্যমে শেয়ার বাজার একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে সেগুলোর আলোচনা নিচে দেওয়া হলো।

১। অর্থের ব্যবহার: এমন অনেক ধনীশ্রেনির ব্যাক্তিগণ রয়েছেন যারা ব্যবসায়ে অর্থ বিনিয়োগ করতে ভয় পায়। তারা শেয়ারে বাজারের শেয়ারের গতি প্রকৃতি বুঝে নির্বিঘ্নে ক্রয় বিক্রয়ে অংশগ্রহণ করতে পারে। তাছাড়া শেয়ার বাজার হতে শেয়ার বা ঋণপত্র এব করসে জনগণের অলস টাকা বিনিয়োগ হয়। 

২। বিনিয়োগে উৎসাহ: শেয়ার বাজারে শেয়ার যে কোনো সময় বিক্রি করে নগদ অর্থ সংগ্রহ করা যায় বলে সাধারণ জনগণ বিনিয়োগে আগ্রহী হয়। সাধারণত পণ্য দ্রব্যের মতো শেয়ার বিক্রির সুবিধা থাকায় জনগণ শেয়ার বাজার হতে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার,বন্ড সিকিউরিটি প্রভৃতি ক্রয় করে। আবার প্রয়োজনমতো সেগুলো শেয়ার বাজারে বিক্রি করে নগদ অর্থে পরিণত করতে পারে।

৩। সহজ ঋণপ্রাপ্তির:শেয়ার বাজারে নিবন্ধন ভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের শেয়ার, সিকিউরিটি ইত্যাদির সহজলভ্য থাকায় এগুলো ঋণগ্রহণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জামানত হিসেবে গণ্য হয় এবং ব্যাংকও এগুলোর নিরাপত্তায় ঋণদান করতে কুণ্ঠাবোধ করে না। কারণ ঋণদাতা শেয়ার বাজারে এসকল শেয়ার বা ঋণপত্র বিক্রি করে নগদ টাকা সংগ্রহ করতে পারে। এর ফলে ব্যাংকের ঋণদান ক্ষেত্র প্রশস্ত হয় এবং ব্যবসায়ীরাও সহজে ব্যাংক থেকে ঋণগ্রহণ করতে পারে।

৪। শিল্পায়নে সহায়তা: একটি দেশের সুসংগঠিত শেয়ার বাজারের সে দেশের  শিল্পায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারণ এতে শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ সহজে মূলধন সংগ্রহ করতে পারে। ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।

৫। ফটকা বাজারের সুযোগ-সুবিধা:শেয়ার বাজারের মূল্য প্রায় মুহূর্তে উঠানামা করে। এর  সুবিধা নিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী শেয়ার বাজারে ফটকা ব্যবসায় শুরু করে। একদল দালাল ক্ষয়-ক্ষতির আংশংকা করে  শেয়ার বিক্রি করে দেয়, তাদের লেনদেনের মাধ্যমেই শেয়ারের চাহিদা ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রিত হয়। কারণ এ ধরনের ফটকা ব্যবসায় শেয়ার বাজারের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

৬। মূলধনের গতিশীলতা; শেয়ার বাজার লাভজনক খাতে বিনিয়োগের পথ নির্দেশ করে। এতে পুঁজির গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। কোনো ব্যক্তি ইচ্ছা করলে এক কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে অন্য কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করতে পারে। তাছাড়া শেয়ার বাজারের তালিকাভুক্ত লাভজনক কোম্পানিসমূহের শেয়ার ও ঋণপত্রের মূল্য তালিকা দেখেও জনগণ বিনিয়োগে উৎসাহিত হয়। এভাবে বিনিয়োগকারীদেরকে ঈন্সিভ খাত বাছাই করতে শেয়ার বাজার সহায়তা করে।

৭। পুঁজি গঠনে সহায়তা: দেশের অভ্যন্তরে মূলধন গঠনে শেয়ার বাজার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। শেয়ার বাজারের লেনদেনের খবর নিয়মিতভাবে সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। এ সকল সংবাদ পড়ে সাধারণ মানুষ কোম্পানিগুলোর সঙ্গতি ও প্রতিপত্তি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে। এতে সাধারণ মানুষের সঞ্চয় প্রবণতা বাড়তে থাকে এবং নবগঠিত কোম্পানিগুলোতে অর্থ বিনিয়োগ বেড়ে যায়। এরূপ ব্যব্যস্থা পুঁজি গঠনে সহায়তা করে।

৮। বিনিয়োগকারীর নিরাপত্তা: শেয়ার বাজারের নিয়মকানুন সদস্যদেরকে কড়াকড়িভাবে মেনে চলতে হয়। ফলে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়। কোনো সদস্য যাতে অবাঞ্ছিতভাবে লেনদেন করে অন্যদের আর্থিক ক্ষতিসাধন করতে না তার জন্য শেয়ার বাজার নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ফলে শেয়ার ও ঋণপত্রে বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের ব্যাপারে নিরাপত্তা অনুভব করে।

৯। এপসাধারণের কাছে; বাড়ির যথার্থ মূল্যায়ন ও শেয়ার বায়াবের নিয়ম হলো অতল সমানের নিন্দিনও করা এবং দেহংগা মাণেও হয়। এরূপ বাবস্থা করা যাতে শেয়ার ও সিনিয়রিটির নাম হলো সকল জোকসান আনুষ্ঠানিক বাজার মূলা উদ্ধৃত্তিতে করণের পারবে।পি বাবস্থা থাকলে যে কোনো বিনিয়োগকারী যে কোরোশোর তার সংরক্ষির শেয়ার ও সিকিউরিটির মূল্যায়ন

১০। প্রস্তুত এৈেতরি বাজারে; শেয়ার বাজার একটি প্রস্তুত বাজার। বিভিন্ন ধরনের শেয়ার, সিকিউরিটি প্রভৃতি পুনঃনিতির জন্য শেয়ার বাজার একটি তাৎক্ষণিক বাজার হিসেবে কাজ করে। এ বাজার জানিয়োগকারীদেরকে স্বপ্ন এর সময়ে বিনিয়োগকৃত অর্থলারিন তসরীয়া যাইবে এে বাজারে অতি সহজেই নগদ অর্থকে শেয়ার সিডিউরিটিতে এবং সিকিউরিটি ও শেয়ারকে নগদ অর্থে পরিণত করা যায়। এতে শেয়ার সিকিউরিটির তারল্য বৃদ্ধি পায়।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শেয়ার বাজারে ভূমিকা
Role of Stock Exchange in the Economic Development of the

দেশের প্রাকৃতিক সম্পদকে জনগণের কল্যাণে নিয়োজিত করতে হলে দেশে বৃহদায়তন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা দরকার। কারণ ভারি শিল্পের সাহায্যে দেশে প্রাকৃতিক সম্পদকে মানুষের ব্যবহারের উপযোগী বকরা সম্ভব। আব্যর বৃহদায়তন শিল্প গড়ে তোলার জন্য বিপুল পরিমাণ পুঁজির প্রয়োজন। দেশের সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুগসংগঠিত শক্তিশালী শেয়ার বাজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ন্যায় উন্নয়নশীল দেশে পুঁজির দুষ্প্রাপ্যতার কারণে শেয়ার বাজার কার্যক্রম অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অধিতকতর তাৎপর্যপূর্ণ। তাই শেয়ার বাজারের ভূমিকাকে নিম্নোক্তভাবে ব্যাখ্যা করা যায়।

১। দীর্ঘমেয়াদি পুঁজির সংস্থান দীর্ঘমেয়াদি পুঁজি সংগ্রহের যে সকল উৎস রয়েছে শেয়ার বাজার সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। শেয়ার বাজারের যথার্থ বিকাশ ঘটলে বিনিয়োগকারীগণ স্বাচ্ছন্দ্যে শেয়ার ক্রয় করতে পারে। এতে শেয়ার বাজারের সদস্য ছাড়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োকারীরা শেয়ার বাজারের সদস্যদের মাধ্যমে কোম্পানির শেয়ার ও ঋণপত্র বিনিয়োগের সুযোগ পায়।

২। বিনিয়োগে আগ্রহ সৃষ্টিঃ শেয়ারমালিকগণ যে কোনো সময় তাদের শেয়ার সংশ্লিষ্ট শেয়ার বাজারের মাধ্যমে নগদ অর্থে পরিণত করতে পারে। শেয়ারের এরুপ তারল্য জনগণকে শেয়ার পুঁজি বিনিয়োগে আগ্রহ সৃষ্টি করছে। এত অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের সুযোগ সম্প্রসারিত হয়।

৩। কোম্পানির আর্থিক অবস্থা আত হওয়া: গুরুত্বপূর্ণ দৈনিক সংবাদপত্রসমূহে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার ও ঋণপত্রের মূল্য প্রতিদিন নিয়মতিভাবে প্রকাশিত হয়ে তাকে। ফলে বিনিয়োগকারীগণ পুঁজি বাজারে প্রদত্ত কোম্পানির আর্থিক। অবস্থা অনুমান করতে পারে। সমজাতীয় কোম্পনির সাফল্য অধিক হলে প্রদত্ত কোম্পানির আর্থিক ব্যবস্থাপনার উপর তার প্রভাব পড়ে। ফলে কোম্পানিগুলোর মধ্যে সাফল্যের জন্য প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এতে কোম্পানির মুনাফা বৃদ্ধি পায় এবং ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হয়।

৪। বৈদেশিক পুঁজির সদ্ব্যবহারঃ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের অন্তর্ভুক্ত। এ দেশের উন্নয়ন বাজেটের সিংহভাগই বৈদেশিক সাহায্য হতে সংগ্রহ করা হয়। অনেক সময এমনও দেখা যায় দেশীয় পুঁজির সংকুলানের অভাবে বৈদেশিক পুঁজির ব্যবহার সম্ভব হয় না। এ দৃষ্টিকোণ থেকে শেয়ার বাজারের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ শিল্পকারখানার উন্নয়নের অন্যতম শর্ত।

৫। প্রতিভাবান উদ্যোক্তা সৃষ্টি: শেয়ার বাজার উন্নত হলে দেশে প্রতিভাবান উদ্যোক্তা শ্রেণীর সৃষ্টি সহজতর হয়। তারা অতি সহজেই শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণে এগিয়ে আসবে। এতে দেশ দ্রুত শিল্পকারখানায় উন্নত হতে পারবে। তাছাড়া শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বিদেশী পণ্যের উপর নির্ভরশীলতা অনেকাংশে কমে যাবে। ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন: ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের ক্ষেত্রেও শেয়ার বাজারের ভূমিকা রয়েছে। পুঁজি সংগ্রহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে

৬।একটি সুন্দর পরিস্থিতি বিদ্যমান কিন্তু ব্যবস্থাপনা দুর্বল হলে সে কোম্পানির ক্ষেত্রে পুঁজি সংগ্রহ করা বেশ কষ্টসাধ্য হয়।। অন্যদিকে, উন্নত ব্যবস্থাপনাবিশিষ্ট কোম্পানির শেয়ার ও ঋণপত্র বাজারে সবার আগে বিক্রি হয়ে যায়। সুতরাং উন্নত ব্যবস্থাপনা কোম্পানির সুনাম বৃদ্ধির পাশাপাশি মুনাফাও বাড়াতে পারে। অনন্য। শেয়ার বাজার জাতীয় সঞ্চয় বৃদ্ধি, মূলধন সৃষ্টি, বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং শেয়ার সাজাগতে অর্থনৈতিক উন্নতির ব্যারোমিটার হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়।

 শেয়ার বাজারে শেয়ার ও ঋণপত্রাদির মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধির কারণসমূহ
(Causes for the Fluctuation of Prices of Shares and Debentures)

শেয়ার বাজার এক শ্রেণীর সুসংগঠিত বাজার ব্যবস্থা। সাধারণ বাজারে পণ্যদ্রব্যাদির মূল্য; যেমন- চাহিদা ও যোগান দ্বারা প্রভাবিত হয়। তেমনি শেয়ার বাজারেও শেয়ার ও ঋণপত্রাদির দাম, চাহিদা ও যোগান দ্বারা প্রভাবিত হয়। কিন্তু পণ্যসামগ্রীগ ছলনায় শোয়াছ ও ঋণপত্রাদির মূল্য উঠানামার গতি একটু ভিন্ন ধরনের। শেয়ার বাজারে মূলা হ্রাস-বৃদ্ধির গতি অত্যন্ত দ্রুত; যেমন-শেয়ারের দু'প্রাপ্যতা দেখা দিলে মূল্য বেড়ে যায়। আবার বিপরীত অবস্থাও হতে পারে। যে সকল কারণে শেয়ার বাজারে মূল্যের উঠানামা করে সেগুলোর আলোচনা নিচে দেওয়া হলো।

১। ব্যবসায় পরিস্থিতিঃ দেশে বিরাজমান ব্যবসায় পরিস্থিতির সঙ্গে শেয়ার বাজারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। এরূপ ব্যবসায় পরিস্থিতি দু ধরনের হতে পারে- তেজীভাব এবং মন্দাভাব। তেজী বাজারের সময় শেয়ারের মূল্য অতি দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। অর্থাৎ মূল্যস্তর হু হু করে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শেয়ারের গায়েও বাতাস লাগে এবং শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পায়। কিন্তু মন্দা অবস্থা দেখা দিলে বিভিন্ন পণ্যের মূল্য হ্রাস পেতে থাকে। ফলে শেয়ার বাজারেও তার প্রভাব পড়ে এবং শেয়ারের দাম কমতে থাকে। কারণ মন্দা অবস্থায় কোম্পানিগুলোর অর্জিত মুনাফার পরিমাণ হ্রাস পায়; ফলে শেয়ারের দাম হ্রাস পায়।

২। ব্যাংক হারঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক প্রবর্তিত ব্যাংক হারের পরিবর্তন শেয়ার বাজারের মূল্যের উপর প্রভাব ফেলে। ব্যাংক হার বৃদ্ধি পেলে ঋণ সংকোচন ঘটে এবং সঙ্গে সঙ্গে শেয়ারের দামও কমতে থাকে। আবার ব্যাংক হার হ্রাস পেলে কথ সংকোচন ঘটে এবং সঙ্গে সঙ্গে শেয়ারের দামও কমতে থাকে। আবার ব্যাংক হার হ্রাস পেলে ঋণের প্রবাহ বাড়ে এবং শেয়ারের দামও চড়া হতে থাকে।

৩। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণনীতিঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণনীতি শেয়ার বাজারকে প্রভাবিত করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ সংকোচন ও দুর্লভ অর্থনীতি গ্রহণ করলে শেয়ার ও ঋণপত্রাদির মূল্য হ্রাস পেতে থাকে। এরূপ অবস্থায় বাজারে সুদের হার বৃদ্ধি পায় এবং পুঁজি বিনিয়োগকারীগণ শেয়ার ও ঋণপত্রাদি বিক্রি করে অর্থ অন্যখাতে বিনিয়োগ করতে শুরু করে। ফলে ঋণপত্রাদির মূল্য কমে যায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুলভ অর্থনীতি ব্যবস্থা গ্রহণ করলে শেয়ার বাজার চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

৪। লভ্যাংশ নীতির পরিবর্তন: কোম্পানিগুলো উচ্চহারে লভ্যাংশ প্রদান করলে শেয়ারের দামও বাড়তে থাকে। আবার লভ্যাংশ প্রদানের পরিমাণ হ্রাস পেলে শেয়ারের মূল্যও কমে যায়। সুতরাং কোম্পানির লভ্যাংশ নীতির পরিবর্তন দ্বারা শেয়ার বাজারে শেয়ারের মূল্যের উপর প্রতাব প্রতিফলিত হয়। মুদ্রাস্ফীতি ও মুদ্রা সংকোচন: মুদ্রাস্ফীতির সময় জনগণের হাতে প্রচুর অর্থ জমা হতে থাকে। তখন তারা অধিক সংখ্যক

৫। শেয়ার ও ঋণপত্রাদি তয় করতে থাকে ফলে শেয়ার বাজার চাঙ্গা হয়ে ওঠে। কারণ, মুদ্রাস্ফীতির কারণে মুদ্রার ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে বলে শেয়ারে বিনিয়োগ দ্বারা মূলধনজনিত লাভ অর্জন করার সম্ভাবনা থাকে। তাই শেয়ারের চাহিদা বেড়ে যায় এবং শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পায়। কিন্তু মুদ্রা সংকোচনের ক্ষেত্রে এর বিপরীত অবস্থা দেখা দেয়।

৬। বিভিন্ন বিনিয়োগকারী সংস্থা; যেমন ব্যাংক থামা বানরে শেয়ারের চাহিদা বেড়ে যায় ও মূল্য বৃদ্ধি। হ্রাস পেতে থাকে। বীমা, বিনিয়োগ সূংস্থা প্রভৃতি একযোগে শেয়ার এন্ড করলে ওখানে। আবার ঐ সকল প্রতিষ্ঠানের শেরেপত্রাদি বিক্রি শুরু করলে শেয়ারের মূল্য

৭। গুজব: শেয়ার বাজারে অনেক ফটকা ব্যবসায়ী রয়েছে, যারা নিজেদের অনুকূলে শুজব এটায়। এরূপ গুজব শেয়ারের মূল্য। উঠানামায় যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের সম্বন্ধে অনুকূল গুজব ঐ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মূল্য বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালানো হয়। আবার গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে শেয়ারের মূল্য হ্রাস করাও যায়। সাধারণত রোজীওয়ালা (Bala) এবং মন্দীওয়ালা (Bears) দের কারসাজিতে এরপ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

৮। সহানুভূতিমূলক উঠানামা : কোনো দেশে একাধিক শেয়ার বাজার থাকলে একটি বাজারে শেয়ারমূল্যের উঠানামা অন্য শেয়ার বাজারগুলোতে ও প্রভাব ফেলে। আবায় কোনো একটি শিল্পকারাখানার শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকলে আরও দু- একটি কোম্পানির শেয়ারের মূলাও সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। এরূপ শেয়ার মূল্যের উঠানামাকে সহানুভূতিমূলক উঠানামা বলে।

৯। ফটকা ব্যবসায়ের প্রভাব: শেয়ার বাজারের ফটকা ব্যবসারদের কারসাজিতেও অনেক সময় শেয়ারমূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে; যেমন- তেজীওয়ালারা কৃত্রিম উপায়ে বাজারে শেয়ারের অভাব সৃষ্টি করে শেয়ারের মূল্য বাড়িয়ে দেয়।

১০। হরতাল, ধর্মঘট: শিল্প ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হরতাল ও ধর্মঘটের একটা সম্পর্ক রয়েছে। হরতাল বা ধর্মঘট হলে শিল্পের উৎপাদন হ্রাস পায় অথচ প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী খরচ ঠিকই থাকে। তাই এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের মুনাফা হ্রাস পায়। পর্যায়ক্রমে


এ ধরনের কর্মসূচি চলতে থাকলে প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন দারুণভাবে ব্যাহত হয় এবং প্রতিষ্ঠানগুলো লোকসানের দিকে ধাবিত হয়। শেয়ার বাজারে শেয়ার মূল্য পরিবর্তনে উক্ত উপাদানগুলোকে দায়ী করা যায়।


১৪। অন্যান্য উপাদানঃ উপরিউক্ত কারণ ছাড়া আরও কিছু কারণ আছে যা শেয়ার মূল্যে হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটায়; যেমন- মন্ত্রিসভার পরিবর্তন, রাষ্ট্রীয় নীতির পরিবর্তন, যুদ্ধবিগ্রহ, নির্বাচন, আন্তর্জাতিক ঘটনাবলি ইত্যাদি। এছাড়া দৈব কোনো কারণেও শেয়ার মূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটতে পারে; যেমন- হঠাৎ বন্যা, ভূমিকম্প ইত্যাদি।

 শেয়ার বাজারে শেয়ার বেচাকেনার পদ্ধতি
Procedure of Transactions in Stock Exchange

শেয়ার বাজারে শেয়ার বেচাকেনার পদ্ধতিকে আমরা দুভাগে ভাগ করতে পারি। যথা-

  আধুনিক পদ্ধতি; 

 অনলাইন পদ্ধতি
 (Online System):

 এ পদ্ধতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কম্পিউটারের মাধ্যমে শেয়ার বাজারের লেনদেন কার্যক্রম পরিচালত হয়। শেয়ার বেচাকেনার জন্য ডাকাডাকি না করে কম্পিউটারের পর্দার মাধ্যমে ব্যবসার কার্যক্রম প্রদর্শিত হয়। ফলে সংশ্লিষ্ট সকলের পক্ষে সহজেই লেনদেনের প্রকৃতি দেখা ও জানা সম্ভব হয়। এ ব্যবস্থায় সাধারণত ক্রেতা- বিক্রেতাগণ শেয়ার বাজারের সদস্য বা দালালদের সাথে যোগাযোগ করে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য যে কোনো কোন দালালের খাতায় হিসাব খোলে। দালান গ্রাহকের পক্ষে নির্দিষ্ট কমিশনের বিনিময়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভারে ক্রয়-বিক্রয় কার্য সম্পন্ন করে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাহাকের নিকট হিসাব বিবরণী দাখিল করেন। অতঃপর লেনদেন নিষ্পা হলে হস্তান্তর দলিল সম্পাদনের মাধ্যমে শেয়ার সার্টিফিকেট হস্তান্তর করা হয়। আমাদের দেশের ডাকা ও চট্টগ্রাম শেয়ার বাজারে বর্তমানে এ পদ্ধতিতেই শেয়ার লেনদেন হয়ে থাকে।

প্রাচীন পদ্ধতি 
(Traditional Approach):

১। ডাক প্রথা (Call Over System); শেয়ার লেনদেনের একটি প্রাচীন পদ্ধতি হলো ডাক এমা। এ পদ্ধতিতে শেহাদ বাজারের একটি নির্দিষ্ট স্থানে বাজারের কর্মকর্তাগণ মাইকের সামনে বসে পর্যায়ক্রমে শেয়ার বা ক্ষণপত্র ক্রয়-বিক্রয়ে উদ্দেশ্যে কোম্পানির নামসহ শেয়ার বা ঋণপত্রের চলতি দাম ঘোষণা করে নিলাম ডাকতে থাকে। এরূপ ডাকে শেয়ার বাজারের সদস্য বা অনুমোদিত ব্যক্তি জবার বা দালাল ব্যতীত অন্য কেউ অংশগ্রহণ করতে পারে না। কোনো সাধারণ দোস শেয়ার বেচাকেনা করতে চাইলে তাকে অবশ্যই শেয়ার বাজারের সদস্যের মাধ্যমে করতে হবে।

২। লেনদেন স্থান প্রথা (Trading Post System): ডাক প্রথারই বর্ণিত রূপ এটি। এ প্রথায় একেকটি শ্রেণীর কোম্পাটির জন্য আলাদা স্থান নির্ধারণ করে সেখানেসই ঐ শ্রেণীর কোম্পানিসমূহের শেয়ার কেনাবেচনা করা হয়। শেয়ার লেনদেনে প্রক্রিয়াটি পূর্বের মতোই ডাক প্রথায় সম্পন্ন করা হয়।

৩। জবিং প্রথা (Jobbing System): ব্রিটিশ শেয়ার বাজার থেকে আগত এ পদ্ধতিতে শেয়ার বাজারকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে জবারদের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচা করা হয়ে থাকে। জবার হলো শেয়ার বাজারে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় প্রতিনিধি। এরা মুনাফার বিনিময়ে নিজ নামে শেয়ার ক্রয়বিক্রয়ের চুক্তি সম্পাদন করতে থাকে। এক্ষেত্রে দালালরা তৃতীয় পক্ষ হিনেবে কমিশনের বিনিময়ে লেনদেন করে। দালালদের কাজ হলো বাইরের শেয়ার ক্রেতা-বিক্রেতার সাথে কথা বলে লেনদেনের ভিত্তি তৈরি করে জবারদের সাথে লেনদেন করা। এ ব্যবস্থায় দালালগণ প্রথমে জবারদের নিকট গিয়ে নিজের পছন্দনীয় রা ক্রেতা বা বিক্রেতার পছন্দনীয় শেয়ারের মূল্য জানতে চান। তবে প্রথমে তিনি বলেন না যে, শেয়ার ক্রয় করবেন না তি বিক্রি করবেন। জবারগণ দুটি দাম উল্লেখ করেন ক্রয় দাম ও বিক্রি দাম। বিক্রি দামের চেয়ে ক্রয় দাম কম হয়। আর এ পার্থক্যই জবারের লাত। জবারের দামটি মনঃপুত হলে তিনি ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে আবদ্ধ হন। এ ধরনের চুক্তি দু রকমের হতে পারে। যেমন- নগদ ও আগাম। নগদ চুক্তির ক্ষেত্রে লেনদেন নগদে (Spot) নিষ্পত্তি হয়। আগাম (Forward) চুক্তিতে নির্দিষ্ট সময় পর লেনদেন সম্পন্ন করা হয়। সাধারণত ১৫ দিনের মধ্যে আগাম চুক্তি নিষ্পত্তি করার বিধান রয়েছে।

শেয়ার বাজারের সমস্যাবলি
Problems of Share Market 

বাংলাদেশের শেয়ার বাজার উন্নত দেশের শেয়ার বাজারের মতো তত সমৃদ্ধশালী নয়। ফলে এ শেয়ার বাজার নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। এ সকল সমস্যাকে প্রধানত দুটি ভাগে বিভক্ত করা যায়; যেমন-

 বহিঃসমস্যা বা পরিবেশগত সমস্যা 

 আন্তঃসমস্যা

বহিঃসমস্যা বা পরিবেশগত সমস্যা: শেয়ার বাজারে কতিপয় বহিঃসমস্যা রয়েছে। নিচে এ সকল সমস্যার বিবরণ দেয়া হলো:

১। শেয়ার বাজার সংক্রান্ত জ্ঞানের অভাব: শেয়ার বাজার লেনদেন প্রকৃতিতে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। আধার দেশের অর্থ বাজারের গতিপ্রকৃতি দ্বারা শেয়ার বাজার প্রভাবিত। কিন্তু বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই অশিক্ষিত। তাদের পক্ষে শেয়ার বাজারের লেনদেনে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়। তাছাড়া শেয়ার বাজার জনগণের জন্য কি ধরনের সেবা প্রদান করতে পারে, কি ধরনের উপকারিতা তারা শেয়ার থেকে পেতে পারে সে সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই অজ্ঞ। ফলে শেয়ার বাজারের সুভদ থেকে তারা বঞ্চিত।

২। সঞ্চয় হার কমঃ এ দেশের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। তাদের মাথাপিছু গাড় আয়েও কম। তাই জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহের পর সঞ্চয় করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ তাদের থাকে না। ফলে তাদের পক্ষে শেয়ার বাজারের অর্থ বিনিয়োগ করা এক ধরনের বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। এতে শেয়ারবাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে না।

৩। পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবঃ বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে খুব সামান্যই লাভজনক খাতে পরিচালিত হচ্ছে। আবার কোন কোম্পানি লাভজনক আর কোনটা অলাভজনক সে সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্যাদিও পাওয়া যায় না। এরূপ অপর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে বিনিয়োগেকারীরা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসে না। ৪।

লভ্যাংশ হার কম: এ দেশের যৌথ মূলধনী কোম্পানিগুলো খুব কম হারে লভ্যাংশ প্রদান করে। আবার কোনো কোনো কোম্পানি নিয়মিত লভ্যাংশও দিতে পারে না। লভ্যাংশের পরিমাণ কম হওয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীগণ শেয়ার বাজারের বিনিয়োগে অংশগ্রহণে আগ্রহ দেখায় না 

৫। তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা কম: বাংলাদেশে বর্তমান দুটি শেয়ার বাজার রয়েছে- এর একটি ঢাকায় এবং অন্যটি চট্টগ্রামে অবস্থিত। আবার কোনো কোম্পানির শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তির জন্য তাদেরকে অনেক ধরনের আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয়। ফলে অনেক কোম্পানির পক্ষে এ সকল আনুষ্ঠানিকতা পালন করা সম্ভব হয় না। এ কারণেই দেশের শেয়ার বাজারহুয়ে নথিভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা বাড়ছে না। এ কারণটি শেয়ার বাজারের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করছে।

৬। ঋণের অভাব: শেয়ার বাজারে লেনদেনকারী বিনিয়োগকারীগণ শেয়ারের বিপরীতে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে কোনো প্রকার ঋণ পায় না বা পেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। ফলে ঋণের অভাবে শেয়ার বাজার সম্প্রসারিত হবেন। 

৭। বিনিয়োগে অনীহা: বাংলাদেশের শেয়ার বাজার বিশেষ করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এর মূল্যসূচক সমস্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে কতিপয় শেয়ার দালালের ও ব্রোকারের কারচুপির ফলে শেয়ার বাজারের মূল্যসূচক ৪ হাজারের কোটায় পৌঁছে যায়। আর এ ফাঁকে কুচক্রি দালাল ও ব্রোকাররা সাধারণ জনগণের হাতে শেয়ার ছেড়ে দিয়ে সরে পড়ে। ফলে শেয়ার বাজারে ধস নামে এবং মূল্যসূচক ৫শ এর কোটায় নেমে যায়। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীগণ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়; পক্ষান্তরে, কতিপয় শেয়ার দালাল ও ব্রোকার কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে নেয়। এখন সাধারণ বিনিয়োগকারীগণ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-এর নাম শুনলেই আঁতকে ওঠে। বিনিয়োগে এরূপ অনীহা শেয়ার বাজারের জন্য নিজে সমস্যা সৃষ্টি করছে।

৮। গোপন তথ্য ফাঁস: শেয়ার বাজারের সালাল ও ব্রোারদের মধ্যে অনেক গোপন তথ্য লুক্কায়িত থাকে। ঐ সকল যাপো তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে তাদেরকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এরূপ তথ্যা ফাঁসের ফলে শেয়ারের মূল। হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে বাড়তেও পারে, আবার অস্বাভাবিকভাবে কমতেও পারে।

৯। অপর্যাপ্ত শিল্পোন্নয়ন: দেশে শিল্প-কারখানা গড়ে না উঠলে শেয়ার বাজার উন্নত হয় না। কারণ শিল্প কারখানা গড়ে উলার পাশাপাশি নতুন নতুন কোম্পনিও গঠিত হতে থাকে এবং শেয়ার বাজারও উন্নত হয়। । 

১০আয়কর; অনেক উন্নত দেশে শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে অর্জিত মুনাফার উপর আয়কর ধার্য করে না। কিন্তু আমাদের দেশে এ ধরনের কোনো সুযোগ নেই। সরকারি প্রতিরক্ষা সঞ্চয়পত্র, বোনাস সঞ্চয়পত্র প্রকৃতির উপর এ ধরনের আয়কর দিতে হ না। তাই আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীগণ শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ না করে ঐ সকল সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে আম লাকবান হচ্ছে।

 আন্তঃসমস্যা: শেয়ার বাজারে কতিপয় আন্তঃসমস্যা রয়েছে। এ সকল সমস্যা হলো নিম্নরূপ:

১। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাব; শেয়ার বাজার পরিচালনায় কতকগুলো লিখিত ও অলিখিত নিয়মকানুন রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এগুলো খুব কমই মানা হয়। এতে শেয়ার বাজারের গতিশীলতা হারিয়ে যাচ্ছে। আর এই কার্যাবলিতে ধারাবাহিকতা বজায়। থাকছে না এবং শেয়ার বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

২। নতুন সমস্যা গ্রহণ; শেয়ার বাজারে নতুন সদস্যপদ লাভ করা খুবই কঠিন। কারণ নতুন সদস্য গ্রহণের নিয়মে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। ফলে পুরাতন সদসগণ নতুন সদস্য গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে এবং নতুন কোনো সদস্য শেয়ার বাজারে প্রবেশ করতে পারে না।

৩। আন্তঃতথ্য প্রকাশ: শেয়ার বাজারের আন্তঃতথ্য প্রকাশ হয়ে গেলে তা বাজার কার্যক্রমে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে মাঝে মধ্যে এরূপ তথ্য প্রকাশ হয়ে যায়।

৪। অমনোযোগ; শেয়ার বাজারের কর্তৃপক্ষকে অনেক সময় বাজার কার্যক্রমে খুব একটা গুরুত্ব দিতে দেখা যায় না। এরূণ অমনোযোগ বাজার কার্যক্রমে সমস্যা সৃষ্টি করে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন