টিসিবি পরিচিত ও টিসিবির কার্যক্রম।



আসসালামু আলাইকুম। আশাকরি আপনি ভালো আছেন।আজকে আপনাকে জানাত চেষ্টা টিসিবি কি ও টিসিবির কার্যক্রম। বাংলাদেশ বাণিজ্য সংস্থা বা টিসিবি ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির ৬৮ নং অধ্যাদেশে প্রতিষ্ঠা হয়। সরকারি পর্যায়ে দেশের আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এই সংস্থা গঠিত হয়। পরবর্তীতে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন নামকরণ করা হয়। দেশের বাণিজ্য নীতি অনুসরণ করে প্রয়োজন মোতাবেক পণ্য আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করে থাকে। এই দপ্তরের প্রধান কার্যালয় ঢাকার কাওরান বাজারে অবস্থিত। এর কয়েকটি আঞ্চলিক কার্যালয়ও রয়েছে। ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির ৬৮নং আদেশ মোতাবেক এই সংস্থাটি পরিচালিত হয়ে থাকে। একজন চেয়ারম্যান থাকে ও তিনজন পরিচালক নিয়ে এর পরিচালনা পর্ষদ কমিটি গঠিত হয়। পরিচালনা পর্ষদের কমিটির চেয়ারম্যান প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরিচালক তিনজন তিনটি বিভাগের দায়িত্বে থাকেন। বিভাগগুলো হলো- পরিচালক (বাণিজ্যিক), পরিচালক (অর্থ), পরিচালক (সি. এম. এস. ও এসডি)  প্রতিষ্ঠানের কাজকে আরও গতিশীল করার জন্য কয়েকটি প্রশাসনিক কার্যবিভাগের মাধ্যমে দাপ্তরিক কার্যাবলি পরিচালনা করা হয়ে থাকে। টিসিবির প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক বিভাগগুলো হলো: (ক) অর্থ ও হিসার বিভাগ (খ) স্থায়ী সম্পত্তি বিভাগ (গ) আমদানি বিভাগ (ঘ) রপ্তানি বিভাগ (ঙ) বাজার গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ (চ) প্রশাসন বিভাগ (ছ) বিক্রয় বিভাগ (জ) পরিবহন ও গুদামজাতকরণ বিভাগ। বর্তমান দেশে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা তথা বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে টিসিবি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

টিসিবি-এর উদ্দেশ্য

বাংলাদেশ বাণিজ্য সংস্থা বা টিসিবি ভোক্তা অধিকার ও বানিজ্যিক নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য নিয়ে গঠন করা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতি বজায় রাখা এবং বাজার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বাস্তবায়ন প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে টিসিবি কাজ করে থাকে। নিম্নে টিসিবির উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হলো:

১। দেশের বাণিজ্য নীতির আওতায় প্রয়োজন অনুযায়ী ভোগ্যপণ্য আমদানি করে এবং উক্ত আমদানিকৃত পণ্য ন্যায্য মূল্যে ভোক্তার নিকট পৌঁছানো।

ব্যবসার পরিবেশের উপাদান জানতে ক্লিক করুন।

২। দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন গতি ত্বরান্বিত করার জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ আমদানি ও বিতরণ করে।শিল্প কারখানার উদ্যোক্তা তৈরী করে থাকে।

৩। দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রচলিত ও অপ্রচলিত পণ্যের রপ্তানি করে ।

৪। দেশে উৎপাদিত পণ্যের বাজার সৃষ্টি করার লক্ষ্যে জরিপ ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা।

৫। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করে।

৬। বাণিজ্য ক্ষেত্রে বৈদেশিক সাহায্যের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করে ভোক্তার নিকট পৌছায় দেওয়া।

টিসিবি-এর কার্যাবলি

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা বাংলাদেশ বাণিজ্য সংস্থা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি সংস্থা টিসিবি এর মাধ্যমে সরকার বেশিরভাগ আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম সম্পাদন করতো। যুগের পরিবর্তনের ফলে মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু হওয়ায় বেসরকারি খাতে আমদানি রপ্তানি বৃদ্ধি পায়, ফলে টিসিবি এর আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ হ্রাস পেতে থাকে। সম্প্রতি দেশে দ্রব্যমূল্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সরকার টিসিবি এর মাধ্যমে কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি করে বাজারে স্থিতিশীলতা আনয়নের চেষ্টা করছে। নিম্নে টিসিবির কার্যাবলি আলোচনা করা হলো :

১। বিশেষ বিনিময় ব্যবস্থায় পণ্যের পরিবর্তে পণ্য আমদানি করে থাকে।

২। দেশে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বিদেশে রপ্তানি করা।

৩। সরকারি বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজন অনুসারে পণ্যসামগ্রী আমদানি করে।

৪। নিত্য প্রয়োজনীয় ও জরুরি পণ্য যেমন: চাল, তেল, চিনি, ডাল ইত্যাদি ডিলারদের মাধ্যমে বিতরণের ব্যবস্থা করা।

৫। রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে যে কোনো ধরনের পণ্য আমদানি ও রপ্তানি টিসিবি করে থাকে।

৬। দেশের ক্রান্তিকালে বা বিশেষ প্রয়োজনে টিসিবি সরাসরি পণ্য বণ্টনের কাজে জড়িত হতে পারে।

৭। আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান সংস্থা ও বাংলাদেশের মান নিয়ন্ত্রণ করা প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কযুক্ত কার্যাদি সম্পাদন করে।

৮। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সাথে আন্তজাতিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রতিস্থাপন করা ও সম্পর্কের উন্নয়ন ধারা ধরে রাখতে কাজ করে।

৯। টিসিবি দেশের পণ্যের ন্যায্য মূল্য স্থিতিশীল রাখতে কাজ করে।

১০। বাজার গবেষণা ও বাজার তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করা।

পরিশেষে বলা যায়, টিসিবি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য তথা পণ্য আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে সরকারকে সহায়তা করে।


1 মন্তব্যসমূহ

নবীনতর পূর্বতন